আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পরিচয়ে একদল যুবক খেলনা পিস্তলের ভয় দেখিয়ে নগদ অর্থ ও একটি মূর্তি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের বোগলাবাড়ি গ্রামে জোগেন সিংহের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে।
ভুক্তভোগী জোগেন ওই গ্রামের খোলাই সিংহের ছেলে। এঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির।
জানা গেছে, গত সোমবার গভীর রাতে মাইক্রোবাস যোগে ১০ জনের একদল যুবক শরীরে পুলিশ ও আনসারের পোশাক, মাথায় হেলমেট পড়ে জোগেন সিংহের বাড়িতে যান। এসময় জোগেনকে ঘুম থেকে তুলে পরিচয় দেন তারা নাকি ডিবির লোক। এসময় তাদের হাতে থাকা খেলনা পিস্তল দিয়ে ভয় দেখান। জোগেনের স্ত্রী-সন্তান কেউ আটক করে রাখে তারা। তাদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে এলাকাবাসীরা আসলে ভুয়া ডিবি পরিচয়ধারীরা হুইসেল বাজিয়ে তাদের বাঁধা দেন। এই সুযোগে জোগেনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৩০ হাজার টাকা, রুপার গলার হার ও একটি সোনার মূর্তি মনে করে পিতলের মূর্তি নিয়ে যায় তারা।
এলাকাবাসীরা জানান, তারা মাইক্রোবাস আর পুলিশের লোকজন দেখে দ্রুত ছুটে আসেন। কিন্তু তারা বারবার ডিবির পরিচয় দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে এলাকাবাসীকে সর্তক করে যাতে কাছে না যেতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যে ভুয়া ডিবির লোকরা জোগেনের বাড়ি লুটপাট করে চলে যায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যাক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। যাতে পরবর্তীতে এমন ঘটনা না ঘটে।
জোগেনের ছেলে পবির সিংহ বলেন, বারান্দায় বাবাকে মারধরের শব্দ পেয়ে আমি ঘর থেকে বের হয়ে দেখি পুলিশ ও আনসার পরিহিত পোশাকধারী ও মাথায় হেলমেট ও দুইজনের হাতে পিস্তলসহ ৮/১০ জন লোক। পরে আমি তাদের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকেও মারধর করে।
জোগেনের স্ত্রী ঢেপু জানান, আমার স্বামী ও ছেলের আওয়াজ পেয়ে আমি বের হয়ে দেখি কয়েকজন লোকজন আমার ছেলেকে ও আমার স্বামীকে আটক করে রেখেছে। এসময় আমার গলা রহেকে রুপার হার টা খুলে নেন।
জোগেন জানান, আমি বারান্দায় শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন এসে আমার মুখ চেপে ধরে। আমি ঠিকমত নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। পরে তারা কোনো কথা না বলে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে আটক করে আমার বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে নগদ গরু বিক্রির ৩০ হাজার টাকা, ১টি রুপার গলার হার ও একটি পিতলের মুর্তি নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, কয়েক দিন থেকে লোকজন বলছে যে আমার বাড়িতে নাকি সোনার মূর্তি আছে। তারাই হয়তো এটা করেছে। এ ঘটনার পর পুলিশ ও বিজিবি বাড়ীতে এসে আশ্বাস দিয়েছে তারা দ্রুতই দোষীদের খুঁজে বের করবে।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাবেদ জানান, এঘটনায় বালিয়াডাঙ্গী থানায় একটি মামলা হয়েছে। মালামাল উদ্ধার ও অপরাধীদের ধরতে প্রতিনিয়তই অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।