নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক নতুন সকালের সংবাদ প্রকাশের পর ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে গ্রহন করা ঘুষের টাকা অবশেষে ফেরত দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যানের একান্ত সহকারি পরিচয়দানকারি শান্তু নামে এক যুবক। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে বুধবার বিকালে ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ঘুষের ২১ হাজার টাকা ফেরত দেন শান্তু।
ভুক্তভোগী আয়েশা জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বিশু মোহাম্মদের ছেলে শান্তু নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুল ইসলামের একান্ত সহকারির পরিচয় দিয়ে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় দুই বছর আগে তার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা, বোন হনুফার কাছ থেকে ১১ হাজার ৫’শ টাকা, ননদ জাহানারার কাছ থেকে ১১ হাজার ৫’শ টাকা এবং মেয়ে মুন্নি আক্তারের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু টাকা নেয়ার দুই বছর পার হয়ে গেলেও ঘড় পাইয়ে দেয়নি শান্তু। ঘর না পেয়ে শান্তুর কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি দুই হাজার টাকা ফেরত দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন। গত ৬ মার্চ সকালে আবারো টাকা চাইতে গেলে আয়শাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট করে শান্তু। মারপিটের শিকার হয়ে ঐ নারী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে গত ১১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ পেয়ে শান্তুকে অফিসে ডেকে পাঠান উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমিজ আলম। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে টালবাহনা করে সময় ক্ষেপন করতে থাকে শান্তু। এরই মধ্যে এ নিয়ে গত ১৩ মার্চ দৈনিক লোকায়ন পত্রিকার অন লাইনে এবং ১৪ মার্চ পত্রিকার পাতায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদের সুত্র ধরে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পত্র আসে। প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি পেয়ে আরো তৎপর হয়ে উঠেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় শান্তুকে বাড়ি থেকে তুলে আনার পরিকল্পনা করেন উপজেলা প্রশাসন। এ খবর টের পেয়ে বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হাজির হয় শান্তু। এ সময় ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করে শান্তু। পরে বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আয়েশা সহ ভুক্তভোগীদের কাছে মাফ চেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দেন তিনি।
আয়েশা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেয়ার পর শান্তু তাদের কাছে একাধিক বার যায় এবং ক্ষমা চায়। তারা সেটা মানেননি। অবশেষে ইউএনও অফিসে শান্তু তাদের টাকা ফেরত দেন । এ জন্য তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানান। টাকা পেয়ে তারা খুশী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমিজ আলম বলেন, দৈনিক লোকায়ন পত্রিকার উদ্বৃতি দিয়ে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চিঠি আসে। তার হস্তক্ষেপে অবশেষে টাকা ফেরত পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। শান্তুকে পর্যবেক্ষনে রাখাা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আকতারুল ইসলাম বলেন, “শান্তু আমার ব্যক্তিগত সহকারি না। সে আমার অফিসে কাজ করত। অভিযোগ পাওয়ার পর অফিস থেকে তাকে বের করে দেই। ইউএনও সাহেব ঘুষের টাকা ফেরত করাতে পেরেছেন, এজন্য ধন্যবাদ ”।