বাঁধার মুখে কালিয়াকৈর-শম্ভুগঞ্জ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট নির্মাণকাজ

শেয়ার

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহে লোডশেডিং দুর্ভোগ লাঘব ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কালিয়াকৈর-শম্ভুগঞ্জ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ বাঁধার মুখে পড়েছে।

ত্রিশাল এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ও একটি ফ্যাক্টরির কারণে কয়েকটি টাওয়ার নির্মাণ কাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মামলাজটসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় এই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালের ১০ জুন বাংলাদেশ সরকার ও চায়না সরকারের যৌথ অর্থায়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কালিয়াকৈর হয়ে ময়মনসিংহ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্দেশ্যে এই সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে ত্রিশালের জটিলতায় সময়মতো শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে দুটি ১৩২ কেভি সোর্স লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ চাহিদা ১২০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। ফলে যে কোনো একটি লাইন ত্রুটিগ্রস্ত হলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নগর ও গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হলে- ময়মনসিংহ অঞ্চলে লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে, তেল-গ্যাস নির্ভর ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর নির্ভরতা কমে সরকারের আর্থিক সাশ্রয় হবে, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে মান উন্নত হবে, ভবিষ্যতে এই অঞ্চলকে শিল্পোন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এলাকায় রূপান্তরিত করবে।

স্থানীয় সমাজকর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “এটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে কেউ এ কাজে বাধা দিতে পারে না। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

অন্যদিকে নগরের সচেতন নাগরিক কামরুল হাসান জানান, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে ময়মনসিংহ বিভাগ লোডশেডিং মুক্ত হবে এবং সর্বশ্রেণির মানুষের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত হবে।”

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম বলেন, “ত্রিশালে চাইনিজ কোম্পানির সঙ্গে কিছু সমস্যা আছে। আলোচনা চলছে, দ্রুত সমাধান হবে বলে আশাবাদী।”

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার জানান, প্রশাসন যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। “প্রয়োজনে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে যাতে দ্রুত এ লাইন স্থাপন সম্পন্ন হয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

website counter