রাণীশংকৈলের নেকমরদ হাটে কুলি শ্রমিকের নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

শেয়ার

আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়
কুলি শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে গরুর গাড়ি ভটভটি চালকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার নেকমরদ হাটে কুলি শ্রমিকের নামে তোলা হচ্ছে চাঁদা। তবে কুলির নামে টাকা তুললেও তারা কুলির কাজটি করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র কুলি শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে বাধ্যতামূলক ভাবে ভটভটি চালকের কাছে গরু প্রতি ১০ টাকা হারে টাকা তোলা হয়।

গত রোববার নেকমরদ সাপ্তাহিক হাটে গিয়ে দেখা যায়, নেকমরদ হাটের সামনে মহাসড়কে দাঁড়ানো গরু ভর্তি শ্যালো মেশিন চালিত ভটভটিগুলো থেকে দুই সড়কের দুই মোড়ে দু’জন যুবক চাঁদা তুলছেন।

চাঁদার টাকাটা কিসের জন্য তোলা হচ্ছে জানতে চাইলে আলমগীর নামে যুবক বলেন, ‘কুলির টাকা তোলা হচ্ছে। প্রত্যেক গরু থেকে ১০ টাকা হারে টাকা তোলা হয়।’

জানতে চাইলে ভটভটিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাট থেকে গরু আমরাই গাড়ির কাছে নিয়ে আসি। আমরাই আবার গাড়িতে তুলি। কিন্তু মহাসড়ক দিয়ে হাটের এলাকা পার হওয়ার সময় কুলি শ্রমিকের নামে এক যুবক ৭ টি গরু থেকে বাধ্যতামূলক ৭০ টাকা নিয়ে নিলেন।’

হাটে গরু কিনতে আসা লোকমান হোসেন বলেন, ‘একটা নৈরাজ্য চালানো হচ্ছে কুলি শ্রমিকের নামে টাকা তোলাটা। তারা কোনো কাজ করছে না। সড়কে দাঁড়িয়ে গাড়ি আটকে জোর করে টাকা তুলছে।’ চাঁদার টাকা না দিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। গাড়ির চাবি নিয়ে যায়।’

ভুক্তভোগী আরেক ভটভটি চালক ইমরান আলী বলেন, ‘গরু প্রতি ১০ টাকা না দিলে গাড়ি আটকে রাখে তারা। তখন বাধ্য হয়ে তাদের টাকা দিতে হয়।’

হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ, কুলিরা যদি হাটে গরু আনা-নেওয়া করে তবেই টাকাটা বৈধ হয়। কিন্তু তারা গরুর দড়িটাও ধরছে না। সাহেবের মত রাস্তায় দাঁড়িয়ে জোর করে টাকা তুলছে।

চাঁদা তোলা আলমগীর বলেন, ‘কুলি শ্রমিকের নামে টাকা তোলা হয়। এটা বিগত কয়েক বছর ধরে তোলা হয়। কেউ কখনো বাধা দেয়নি।’

কুলির কাজ না করে টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কেউ ডাকলে আমরা যাই। না ডাকলে কিভাবে যাবো। তাই সড়কে দাঁড়িয়ে কুলি খরচ বাবদ প্রত্যেক গরুপ্রতি ১০ টাকা নেওয়া হয়। সারা দিনে প্রায় ৬০০/৭০০ গরু ক্রয়-বিক্রয় হয়। এতে ১০ টাকা হারে সারা দিনে ৬/৭ হাজার টাকার মত গরু থেকে কালেকশন হয়। এছাড়াও ধানের গাড়ি, ছাগলের গাড়ি ইত্যাদি পণ্যের উপরে তো একটা টাকা তোলা হয়।

এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, ‘হাটে এ ধরনের টাকা তোলা হচ্ছে এটি আপনার মাধ্যমে জানলাম। বিষয়টি ওসিকে দেখার জন্য বলা হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

website counter