গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহঃ
গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন। তিনি ছিলেন একজন সাহসী সংবাদকর্মী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী।
শুক্রবার (০৮ আগস্ট) গাজীপুর চান্দনা ঈদগাহ মাঠে জুম্মার নামাজের পর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে নিজ এলাকা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা ৪৬নং ভাটিপাড়ার প্রাইমারি স্কুলের মাঠে সন্ধ্যা সারে ৭টার সময় নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষ হওয়ার পর পারিবারিক কবরস্থানে তুহিনের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহত সাংবাদিকের নাম মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩২)। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ৬নং ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তিনি জাতীয় দৈনিক ‘প্রতিদিনের কাগজ’ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন।
প্রতিদিনের কাগজের সম্পাদক খাইরুল আলম রফিক বলেন, গতকাল (০৭ আগষ্ট) বৃহস্পতিবার রাতে তুহিন এক নারী ও সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করার পর নিজের প্রাণ রক্ষার দৌড়ে এক চায়ের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে বুকে, গলায়, কাঁধে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে জনসম্মুখে হত্যা করেন। আমার সহকর্মী তুহিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়, সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।
সাংবাদিক তুহিনের জানাযায় অংশগ্রহণ করেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। জেলা ও উপজেলার কর্মকরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণ।
এর আগে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তুহিন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বাড়িতে উপস্থিত স্বজনেরা জানান, আসাদুজ্জামান তুহিন ২০০৫ সালে ফুলবাড়িয়া আল হেরা স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৭ সালে সিলেট এম সাইফুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর গাজীপুরের ভাওয়াল কলেজ থেকে অনার্স করে সেখানে ভাই জসিম উদ্দিনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।
পরে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি নেন। পাশাপাশি ২০১২ সালে সংবাদপত্রে কাজ শুরু করে ওষুধ কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দেন। এরই মধ্যে ২০০৯ বা ১০ সালের দিকে হঠাৎ বড় ভাই জসিম ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।