ঠাকুরগাঁওয়ে গৃহবধূ খায়রুন হত্যা: ৮ দিনেও আসামি গ্রেফতার হয়নি

শেয়ার

মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গৃহবধূ খায়রুন নাহার (৩০) হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধারের আট দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সর্বস্তরের জনগণ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

মানববন্ধন থেকে ঘোষণা আসে, দ্রুত গ্রেফতার না হলে থানাঘেরাও, ইউএনও অফিস ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চৌরাস্তায় সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে ২ ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধনে প্রায় ৪ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় চৌরাস্তার চারটি সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখেন মানববন্ধনকারীরা।

ঘণ্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে নিহত গৃহবধূর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গৃহবধূর মা-বাবা, মামা জিয়াউর রহমান, ভাই আলামগীর, মাহাবুব আলম, ব্যবসায়ী শাহিন, সাংবাদিক হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক আল মামুন জীবন, স্থানীয় নুর আলম সিদ্দীক, নুরজামান প্রমুখ।

মানববন্ধনে নিহত খায়রুন নাহারের মা আলেয়া বেগম ও বাবা সাদেকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ের সন্তান না হওয়ায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত, মেয়েটা সংসারের জন্য সব সহ্য করত, অবশেষে তারা আমার মেয়েকে হত্যা করে কবরের পাশে ফেলে রেখে গেছে, আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য লজ্জার, এখন প্রযুক্তির যুগে ৮ দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতার না হলে থানাঘেরাও, ইউএনও অফিস ঘেরাও এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সাংবাদিক হারুন অর রশিদ ও আল মামুন জীবন বলেন, বালিয়াডাঙ্গীতে দিন দিন হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে, আজ খায়রুন নাহার, কাল হয়তো আমাদের মা-বোনেরা এমন ঘটনার শিকার হতে পারে, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে সাত দিনের মধ্যে প্রেস ব্রিফিং করে অগ্রগতি জানানোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার না করে যেন নিরীহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা না হয়, তারা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের মূল রহস্য উদঘাটনের আহ্বান জানান।

উল্লেখ, গত ২১ এপ্রিল (সোমবার) সকাল ৮টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রামে গৃহবধূ খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরের কবরস্থানের পাশে ফেলে রাখা হয়।

নিহত খায়রুন নাহার ওই গ্রামের তাজমুল হকের স্ত্রী এবং জিয়াখোর গ্রামের সাদেকুল ইসলামের মেয়ে।

এ ঘটনায় বালিয়াডাঙ্গী থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তবে আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি, ফলে জনমনে অসন্তোষ বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

website counter