স্টাফ রিপোর্টার :
ওষুধ ছাড়াই কেবল তেলাপিয়া মাছের চামড়া দিয়ে সারবে পোড়া ক্ষতের চিকিৎসা! শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ব্রাজিলের চিকিৎসকরা এমনই এক যুগান্তকারী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যেখানে তেলাপিয়া মাছের চামড়া ব্যবহার করে ওষুধ ছাড়াই পোড়া ক্ষতের চিকিৎসা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রচলিত চিকিৎসার চেয়ে তেলাপিয়ার চামড়া দিয়ে চিকিৎসায় খরচ কমবে ৭৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে ক্ষত সারবে আরও কম সময়ে।
সাধারণত তেলাপিয়া মাছ সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের খাদ্যতালিকায় এটি বেশ জনপ্রিয়। তবে এবার গবেষকরা জানাচ্ছেন, তেলাপিয়া মাছের ত্বকে প্রচুর আর্দ্রতা ও কোলাজেন প্রোটিন আছে, যা মানুষের ত্বকের বৈশিষ্ট্যের প্রায় কাছাকাছি। শুধু তা-ই নয়, এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর এবং ব্যথা উপশমেও সহায়ক। এই ত্বক ক্ষতস্থানে লাগালে তা দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
কিন্তু কি এই চিকিৎসা পদ্ধতি? এই পদ্ধতিতে প্রথমেই তেলাপিয়ার ত্বক জীবাণুমুক্ত করা হয়। এরপর এটি সরাসরি পোড়া স্থানে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। কোনো ক্রিম বা ওষুধের প্রয়োজন হয় না। প্রায় ১০ দিন পর এটি সরিয়ে ফেলা হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এটি খুলতে গিয়ে রোগী কোনো ব্যথা অনুভব করেন না বলেই জানান চিকিৎসকরা।
তবে প্রশ্ন থাকে প্রচলিত চিকিৎসার তুলনায় কী সুবিধা? সাধারণত পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায় শুকরের চামড়া বা মানুষের টিস্যু ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এসব উপকরণের অভাব হলে, গজ আর ব্যান্ডেজ দিয়েই কাজ চালানো হয়, যা প্রায়ই যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু তেলাপিয়ার ত্বক এই অসুবিধার সহজ সমাধান নিয়ে এসেছে। ব্রাজিলে ব্যাপকভাবে চাষ হওয়া তেলাপিয়া মাছের ত্বক সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। এই অব্যবহৃত সম্পদই এখন কাজে লাগিয়েছেন গবেষকরা। তারা এখন পর্যন্ত ৫৬ জন রোগীর ওপর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন এবং সাফল্যের কথা জানিয়েছেন। সেই সাথে তেলাপিয়ার ত্বক বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার জন্য তারা ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন।