আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে লগি বৈঠা দিয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল। পনের বছর তারা জোড় করে ক্ষমতায় দখল করেছিল। তারা জানতো সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে সবার আগে লগি বৈঠার বিচার হবে। শাপলা চত্বরের আলেম, পিলখানায় আর্মি অফিসার ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলেমদের হত্যার বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম।
মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখা আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় ১৪ বছর পর প্রকাশ্যে জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে জেলার রুকনরা তাদের গোপন ভোটে নতুন আমির নির্বাচন করবেন।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিয়মে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে দলের স্বার্থ নয়, দেশের মানুষের স্বার্থ আর শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিবে। জামায়াতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার হচ্ছে, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের চেতনাকে নস্যাৎ করার জন্য একদল মানুষ ওঠে পড়ে লেগেছে। আমরা তা হতে দেবো না।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরে শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে বন্দী রেখেছিল আওয়ামী লীগ। জামায়াতের ৫০০ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে তারা। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বিনা অপরাধে জেলে আটকে রেখেছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৬টি বছর জেলে রেখেছিল। ৬৭৭ জন মানুষকে গুম করেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, যারা জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল, তারাই আজ জনগণের ভয়ে পালিয়ে গেছে। দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য রাজনীতি করলে তাদের এভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হতো না। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। মানুষকে মানুষ মনে করতেন না। প্রতিটি অপকর্মের ফল তাদের পেতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কোনো প্রতিশোধ নেবে না, তবে জুলুমের শিকার প্রতিটি মানুষকে ন্যায়বিচার দেবে।
১৪ বছর আওয়ামী সরকারের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার জামায়াতে ইসলামী জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রকাশ্যে রুকন সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো. আলমগীরের সঞ্চালনায় রুকন সম্মেলনে বক্তব্য দেন, দিনাজপুর জেলার আমীর আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও মাওলানা ফজলে রাব্বি মোর্তজাবী।