আনোয়ার হোসেন আকাশ,
(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেননা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সহকারী (তহসিলদার)। সেই কারণে প্রতিনিয়ত ভূমি অফিসে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবা গ্রহীতাদের। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিলে কাজ তো দূরের কথা সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কোনো কথায় বলেন না । এবার সেই ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে গুনে গুনে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে ভূমি অফিসের সহকারী রেজাউল করিমকে।
ঘটনাটি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড়-কাশিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ভূমি অফিসের অফিস সহকারী রেজাউল করিম নিজ দপ্তরে বসে সেবাগ্রহীতাদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ (ঘুষ) গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা। বলছেন ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম জানান, যে জায়গা খারিজ করতে তিন হাজার টাকা লাগে সেখানে দশ থেকে পনের হাজার টাকা দিতে হয়। শুধু তাই নয় টাকা নিয়েও কাজ করে দিতেও হয়রানি করে। মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুজনে মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে।
অভিযুক্ত রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ভূমি উন্নয়ন কর সেবা বিনিময়ে ঘুষ নেয়ার ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোলেমান আলী গত এক সেপ্টেম্বর তারেক হাসান তাহসিন সহকারী কমিশনার ঠাকুরগাঁওকে এ নিয়োগ দেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা তারেক হাসান তাহসিন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তারেক হাসান তাহসিন জানান, অভিযুক্ত তহসিলদার রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় ঘুষ-দুর্নীতির ঘটনা চিঠি প্রাপ্তির ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে ভিডিও ক্লিপসহ তথ্যাদির সাহায্য নেয়া হবে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আরো কয়েকদিন সময় বেশি লাগতে পারে মর্মে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।