ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঃঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার বাজার সংলগ্ন আর বিবি ইট ভাটাতে স্বর্ন পাওয়ার ঘটনা টি কে গুজব , মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ভাটা মালিক কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এমনটিই জানিয়েছে ভাটা মালিক রুহুল আমিন, তিনি বলেন কে বা কাহারা ভাটার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এমন গুজব ছড়িয়েছে যা আমার ব্যাবসায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।
তিনি আরো বলেন এখানে কোন স্বর্ণ নাই কোন স্বর্ণ পাওয়া যায়নি এটি সম্পূর্ণরূপে গুজব আমাকে ব্যাবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এমন গুজব ছড়িয়েছে একটি কুচক্রী মহল। ইট তৈরি করতে বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসা মাটিতে স্বর্ন থেকে থাকলে ভাটায় প্রায় ২শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন তারা মাটির কাজ করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাটি কাটা,মাটি মিক্সচার ও কাঁচা ইট বানায় স্বর্ন পাইলে আমার শ্রমিকদের আগে পাওয়ার কথা শ্রমিকরা আগে না পেয়ে বাইরের লোক পেয়েছে এমনটা কথা ছড়িয়ে পড়েছে এটা আপনাদের কাছে কতটা বিশ্বাস যোগ্য? এবং কি কে পেয়েছে এটির এখন ও সঠিক তথ্য প্রসাশন ও সাংবাদিক ভাইদের কাছে নেই।
বর্তমান এ ভাটার মাটির তিনটি স্তুপ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এখন ১৪৪ ধারা জারি আছে। আমাদেরও কাজ বন্ধ আছে এ ঘটনায় অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে ভাটায় কর্মরত শ্রমিক, ট্রলি ড্রাইভারদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি এখনও। এমন পরিস্থিতি চললে ব্যাবসা পুরোদমে বন্ধ হয়ে পড়বে।
ইট ভাটা শ্রমিক জয়দেব,ছতিশ রায় জানান ভাটায় মাটি এলে সর্ব প্রথম আমরা সে মাটি ব্যাবহার করে থাকি ইট তৈরির কাজে সোনা থাকলে আগে আমাদের পাওয়ার কথা, যেহেতু মাটি দিয়ে আমাদের প্রতিদিন ইট তৈরি করা লাগে, আমরা এখানে দের থেকে দুই শ জন কাজ করি কৈ আমাদের মধ্যে তো কেউ পায়নি। মালিক কের ক্ষতি ও বিপদে ফেলতে এই ঘটনা টি ঘটিয়েছে ।
ইট ভাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটন তিনি জানান, কে বা কাহারা ভাটা মালিকের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এমন গুজব ছড়িয়েছে যা ভাটার মালিকের ক্ষতি হয়েছে । তিনি বলেন এখানে কোন স্বর্ণ নাই কোন স্বর্ণ পাওয়া যায়নি এটি সম্পূর্ণরূপে গুজব ভাটা মালিক রুহুল আমিনের ক্ষতি করার জন্য এমন গুজব ছড়িয়েছে একটি মহল। বাজার থেকে নিয়ে আসা সিডিগোল এর বিভিন্ন প্রকার স্বর্ণের কালার এমন কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে। যেমন গলার চ্যান এর টুকরো ,হাতের চুড়ি আংটি কানের দুল সহ বাজারে পাওয়া পাঁচ টাকা দামের চকলেট কয়েন যার স্বর্ণের কালার এর মত দেখতে সেগুলো মাটির স্তূপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে।
এই গুজবে ভাটায় অতিরিক্ত লোকজন এর সমাগমে ইট প্রস্তুত ও বিক্রির ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এ ভাটায় প্রায় ২শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন এদের সংসার চলবে কিভাবে এরা তো দিনমজুর দিন আনে দিন খায় এই ঘটনায় ভাটা মালিকের ক্ষতি হয়েছে গরিব মানুষদের ক্ষতি করিয়েন না। বর্তমান এ ভাটা বন্ধ আছে শ্রমিকদের কাজ ও বন্ধ আছে এই ২০০ শ্রমিক এখন কর্মহীন হয়ে গেছে, তাঁরা কি করে খাবে এদের পরিবার চলবে কিভাবে।
যারা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছিলেন যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সহ স্বর্ণ পাওয়ার ঘটনাটি পত্র-পত্রিকায় টেলিভিশনে দেখেছেন এটা সম্পূর্ণরূপে গুজব ও মিথ্যা। আপনারা কি সেই সব পত্র পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল এ স্বর্ন পাওয়া ব্যাক্তির বক্তব্য শুনেছেন? অজথা গুজবে কান দিবেন না, ভাটা মালিক এর ও ভাটায় কাজ করা গরিব অসহায় দিনমজুর শ্রমিকদের ক্ষতি করিয়েন না আমাদের এমনিতেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। সেই সাথে ভাটায় ব্যাবহার করা জিনিস পত্র ও হারিয়ে গেছে।
এদিকে গত শনিবার (২৫শে মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাতিহার আরবিবি ইটভাটার আশ পাশে ১৪৪ ধারা জারি করে একটি প্রজ্ঞাপন দেন প্রশাসন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার রাজোর গ্রামের মো. রুহুল আমিনের মালিকানাধীন আরবিবি ইটভাটায় মাটির স্তূপ খুঁড়ে সোনা পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বেশ কয়েকদিন ধরে খুন্তি, কোদাল, বাশিলা ডোহকি, শাবুল দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়তে আসতো প্রতিদিন। সোনার সন্ধান করতে আসা আগ্রাসী লোকজন স্বর্ণ পাওয়ার আশায় ঝগড়া-বিবাদ করছে ও দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছিল প্রতিদিন মাটি খুঁড়ে স্বর্ণের সন্ধান করতে থাকলে যেকোনো সময় ঘটনাস্থলে মারামারি, খুন, জখমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সীখানা শাখা থেকে উক্ত স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান ইটভাটা এলাকা ও এর আশপাশে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেন।
এই বিষয়ে মুঠোফোনে রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান বলেন সয়েল টেস্ট’ মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট থেকে আগামীকাল একটি টিম মাটি পরীক্ষার জন্য আসবে এরপর উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তক্রমে ১৪৪ ধারার বিষয়টি জানানো হবে ।