আনোয়ার হোসেন আকাশ,
(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি :
শেষ মুহূর্তের প্রচারনায় জমে উঠেছে ভোটের মাঠ। আর ক’দিন পরেই ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট। পোস্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকাগুলো। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তাঁরা শহরের উন্নয়নসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটারদের।
আগামী বুধবার (২৯ মে) এ উপজেলায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেঁছে নিবেন। তবে ভোটের মাঠে আওয়ামীলীগের পাশাপাশি বিএনপি ও অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভোটের মাঠে তাপপ্রবাহ বইছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও ভাগ্য নির্ধারণের দিন হানাহানির শঙ্কা করছেন ভোটাররা। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান মিলে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আখতারুল ইসলাম (মোটরসাইকেল), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব (ঘোড়া) ও উপজেলা বিএনপির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সুকুমার রায় (আনারস) প্রতীকে মাঠ কাপাচ্ছেন। তবে তিনজনের মধ্যে ভোটের মাঠে এগিয়ে আছেন ঘোড়া প্রতীকের রেজওয়ানুল হক বিপ্লব।
আর পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবু সাঈদ মো: আকলিমুর রহমান (টিউবওয়েল), মো: আমির হুসেন (চশমা), মো: ইত্তা- শাম- উল- হক (তালা)। আর নারী ভাইস চেয়ারম্যান ভারতী রানী রায় (হাঁস), মোছা: কোহিনুর রহমান (ফুটবল) মোছা: মাহফুজা আকতার (কলস) ও মোছা: সাবিনা খাতুন (বৈদ্যুতিক পাখা) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা, প্রচারনাসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। এছাড়া বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে নির্বাচনী গান পরিবেশন ও মাইকিং করছেন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা।
অন্যদিকে, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, আলোচনা তত বাড়ছে কে হবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৎ, যোগ্য, পরোপকারী ও বিপদে যাকে কাছে পাবেন এমন প্রার্থীকেই বিজয়ী করবেন তারা। যে প্রার্থী পীরগঞ্জের উন্নয়ন করতে পারবে, সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে পারবে তাকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে চান সাধারণ ভোটাররা।
তাঁরা আরো জানান, প্রতীক দেখে নয় এলাকার উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন এবং ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত এমন প্রার্থীকেই বেছে নেবেন তাঁরা। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান তাঁরা। আর চেয়ারম্যান পদে মূল লড়াই হবে ঘোড়া প্রতীকের রেজওয়ানুল হক বিপ্লব ও মোটরসাইকেল প্রতীকের মোঃ আখতারুল ইসলামের। তবে কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে আশঙ্কার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে যেতে পারে সেজন্যে প্রশাসনের আহব্বান জানান তাঁরা।
চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুল হক বিপ্লব বলেন, ভোটাররা ঘোড়া প্রতীকে ভোট দিতে অপেক্ষায় রয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে মাদক ও চাঁদাবাজমুক্ত পীরগঞ্জ উপজেলা গড়তে সবার সঙ্গে মিলে কাজ করবো। পীরগঞ্জ হবে আধুনিক, শিল্পোন্নত শিক্ষা ও পর্যটনবান্ধব উপজেলা।
আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আখতারুল ইসলাম বলেন, এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন, সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন এবং স্মার্ট উপজেলা গড়তে ২৯ মে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আমাকে মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী সুকুমার রায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে আনারস প্রতীকে ভোটারদের কাছে ভোট চান।
এ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬১ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪ ও মহিলা ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৭ জন। আর ভোট কেন্দ্রে ৭৬ টি।
এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠ রাখতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মন।
তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিস্থিতি যেভাবে ভাল থাকে সে অনুযায়ী আইনশৃংখলা বাহিনী কাজ করবে। প্রশাসন পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।