আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
প্রচন্ড রৌদের তাপ উপেক্ষা করে কোন দিক-বেদিক না দেখে হাতে ধারালো ছোট সাবল বা ডাঙ্কী নিয়ে এক নিশানায় মাটি খুঁড়ে যাচ্ছে একদল নারী- পুরুষ। উদ্দেশ্য একটাই এখানকার মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যেতে পারে দামী স্বর্ণ। তাই কোনদিকে দেখাদেখি না করেই চলছে মাটি খনন। কারণ তারা আছে স্বর্ণের খোঁজে।
ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার বাঁচোর ইউনিয়নের রাজোর এলাকায় অবস্থিত আরবিবি বিক্স ভাটার জমা করে রাখা মাটির স্তুপে। কত কয়েকদিন আগে কথা উঠে আরবিবি ইট ভাটায় স্তুপ করে রাখা মাটিতে। মাটি খুড়লেই মিলছে স্বর্ণের বিভিন্ন অংশ। এ কথা ছড়িয়ে পড়লে গত কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষ মাটি খননে মেতে পড়ে। তবে স্বর্ণ পেয়েছে এমন কারও এখনো মিলেনি।
বুধবার দুপুরে আরবিবি ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়,ইটভাটাটির ঠিক পশ্চিম পাশে একটি মাটির স্তুপে বিভিন্ন শ্রেণী মানুষের জটলা। সে জটলার পাশেই ছোট সাবল বা ডাঙ্কী দিয়ে আস্তে আস্তে মাটি খনন করে বাছাই করছে বয়স্ক যুবক কিশোর কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ।
এ সময় মালেকা নামে এক নারীর সাথে কথা হয় প্রতিবেদেকের তিনি বলেন, পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছি শুনেছি ইটভাটার জন্য আনা মাটিতে স্বর্ণের বিভিন্ন অংশ রয়েছে। অনেকে স্বর্ণের জিনিস পেয়েছে। তাই সকাল থেকেই মাটি খনন করছি। তবে এখন প্রযর্ন্ত স্বর্ণের কিছু মেলেনি। তার সাথেই ইশিতা নামে মালেকার কিশোরী নাতনী এসেছে সেও মনোযোগ দিয়ে মাটি খনন করে বাছাই করছে। ইশিতা বলে,যদি স্বর্ণ পায় তাহলে আমার অনেক ভালো লাগবে, ওঠা বিক্রি করে আমি নতুন কাপড় কিনবো।
একইভাবে সেখানে কথা হয় শ্রী নারায়ন এর সাথে তিনি বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের আশেপাশে অনেক দামী জিনিসপত্র মাটির নিচে রয়েছে। এটি প্রচলিত। সেই সামরাই মন্দিরের পাশের জমি খনন করে এ মাটি আনা হয়েছে। কেউ একজন নাকি মাটি খননের সময় স্বর্ণের বালা পেয়েছে। সে কথা ছড়িয়ে পড়লেই সবার মত সেও এসেছে স্বর্ণের সন্ধানে। তবে বুধবার পর্যন্ত মাটি খনন করে কেউ স্বর্ণের কোন অংশ পেয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তুপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ওই মাটির স্তুপ থেকে নাকি স্বর্ণের জিনিস পাওয়া গেছে। এর পর থেকেই সাধারণ মানুষ দিন রাত ওই মাটির স্তুপ খনন করে বাছাই শুরু করেছে। তবে কেউ স্বর্ণের কোন অংশ পেয়েছে এ মন খবর তারা পায়নি। তবে সাধারণ মানুষদের ভাটা মালিক নিবিত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হচ্ছে। মানুষ দলে দলে আসছেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।