নিজস্ব প্রতিবেদক :
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘কাকতাড়ুয়া’ নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র। দীর্ঘদিন যাবৎ তরুণ-তরুণীদের চাওয়া ছিলো এই উপন্যাসটি চলচ্চিত্র বা নাট্যরূপ পাক। কিন্তু এর নির্মাণকাজ ব্যাপক ও চরিত্রবহুল হওয়ায় কেউ এটির নির্মাণে এগিয়ে আসেননি। ২০১২ সালে সরকারি অনুদানে ‘কাকতাড়ুয়া’ অনুমোদন পেলেও নানা জটিলতায় এখনো সেটি আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রতি উর্বশী ফোরাম ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ শিরোনামে চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছে। কাকতাড়ুয়া উপন্যাসটির ‘ কাকতাড়ুয়া বুধা’ নামে চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন ড. মো. হারুনুর রশীদ।
কিশোর মুক্তিযোদ্ধা বুধা। কৈশোরেই কলেরা রোগে মা-বাবা পরিবারকে হারিয়ে শোকে-কষ্টে জমে পাথর হয়ে গেছে। এখন গ্রামের সকলের সহযোগী একজন সে। ১৯৭১-এ বঙ্গবন্ধুর ০৭ মার্চের ভাষণ শুনে সে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত হয়। হঠাৎ একদিন তাদের গ্রামটিতে হানাদারদের আক্রমণ হয়। বাজার পুড়িয়ে লোকজনকে হত্যা করা হয়। গ্রামের লোকজন সব শরণার্থী হয়ে গ্রাম ছাড়তে শুরু করে। কিন্তু বুধা গ্রাম ছেড়ে যায় না। গ্রামের আলী ও মিঠু’র সহায়তায় গ্রামেই গড়ে তোলে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি। রাজাকার চেয়ারম্যান আহাদ মুন্সির বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বুধা। আবার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার শাহাবুদ্দিন গোপনে গ্রামে এসে বুধা’র সহযোগিতা নেয়। বুধা গোপনে গ্রামের আর্মি ক্যাম্পের বাংকারে শক্তিশালী মাইন পুঁতে আসে। ক্যাম্পটা পুরোটাই ধ্বংস হয়ে যায় বুধা’র কৌশলে। অবশেষে বিজয়ী হয় বুধা’র কৌশলী মুক্তিবাহিনী।
চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাজু খাদেম, কচি খন্দকার, মনিরা মিঠু, পলাশ লোহ, তাসমিতা শিমু, সুস্ময় সরকার মুগ্ধ, মালেক, সাথী, অহনা, মালিহা, রানা, দ্বীপ রাজ, ভগবতী, গৌতম দাস বাবলু, আঞ্জুয়ারা শিখা, হীরা, হারুনুর রশীদ, সাখাওয়াত সুজন, সৃজনী, কাঞ্চন খান, নাফিজ, স্মৃতি, তারাপদ, শিউলী, রুম্মান প্রমুখ।
সিনেমাটির শুটিং লোকেশন দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চল। চলচ্চিত্রটির সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিওপি নিয়াজ মাহবুব। ডিওপি হিসেবে আরো কাজ করেছেন জীবন দাস ও মুন্না। শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন সুজাত শিমুল। সহকারী পরিচালনা করেছেন সারোয়ার জাহান আকাশ ও দ্বীপরাজ। চলচ্চিত্রটির সম্পাদনা করছেন প্রিন্স সজল। চলচ্চিত্রটি উর্বশী ফোরাম ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে। দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে ভিডিওকর্মটি। শত শত দর্শক মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, “আমি কাকতাড়ুয়া উপন্যাসটি অনেক পড়েছি এবং এখন এটি দেখে ভালো লাগছে। ধন্যবাদ এতো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য। ‘মরণের কথা মনে করলে যুদ্ধ করা যায় না। যুদ্ধ করলে তাকে মরতেই হবে’- এই কথাটি এখনো মনে আছে।”